সদ্য সংবাদঃ নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে ও নিজ উদ্যোগে সাড়ে সাত শত বৃক্ষ রোপণ করেছেন আজ।
শনিবার (২৭ জুন) সকালে নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম সোনারগাঁওয়ের ২৬ টি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের মেঘনা নদী বেষ্টিত নুনের টেক এলাকায় অবস্থিত সৌন্দর্যে ঘেরা অবহেলিত মায়া দ্বীপে তিনি কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, শিমুল, মেহগনি - সহ বিভিন্ন ফলদ ও বনজ বৃক্ষ রোপণ করেন।
বৃক্ষ রোপন শেষে, অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে মেঘনা নদীর স্বচ্ছ পানিতে গোসল করেন এবং সবাইকে নিয়ে মধ্যাহ্নভোজ করেন।
এসময় সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন,
সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী বৃক্ষের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। বৃক্ষ পরিবেশ ও প্রকৃতি জীবজগতের পরম বন্ধু। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্বাহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বৃক্ষ। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অতি জরুরি অক্সিজেন আসে বৃক্ষ থেকে। বৃক্ষ মানুষের জীবনের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
মানব সভ্যতার চরম উৎকর্ষের যুগে বিশ্বজুড়ে পরিবেশগত বিপর্যয় একটি মারাত্মক সমস্যা। পরিবেশের অবক্ষয় ও দূষণের ফলে সমাজজীবন ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। পৃথিবীর অনেক অঞ্চলের মতো বাংলাদেশেও পরিবেশ দূষণের বিরূপ প্রভাব দৃশ্যমান।
উপজেলার বারদী ইউনিয়নের মেঘনা নদী বেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল মায়াদ্বীপ। মেঘনা নদীর ঠিক মাঝ খানে জেগে ওঠা একটা ত্রিভুজ আকৃতির চর।
বৃক্ষ রোপনের ফলে পরিবেশ যেমন রক্ষা পাবে তেমনি এই অবহেলিত দ্বীপের সৌন্দর্যকেও আরোও বাড়িয়ে দেবে শতগুণ।
তিনি আরো বলেন, মায়া দ্বীপে রোপণ করা বৃক্ষের পরিচর্যায় দুজন লোক দুই বছরের জন্য নিয়োজিত থাকবে।
এসময় পরিবেশ রক্ষা উন্নয়ন সোসাইটি, ব্লাড ফর নারায়ণগঞ্জ ,আলোকিত বাড়ী মজলিস, নদী বাঁচাও আন্দোলন, স্বপ্নের কাঁচপুর স্বপ্নের সোনারগাঁও, পথ শিশু দরিদ্র ফাউন্ডেশন সহ ২৬ টি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সদস্য ও উপজেলার বিভিন্ন সাংবাদিক ক্লাবের সদস্যরা বৃক্ষ রোপনে অংশগ্রহণ করেন।
পরিবেশবাদীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলামের এমন উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, উপজেলার মেঘনা নদীবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল নুনেরটেক-মায়াদ্বীপ গরিবের ঘরের সুন্দরী বউ, সবার ভাবী। সবার নজর এখন এ দ্বীপের দিকে। তাই এই সৌন্দর্যময় দ্বীপটি বালু সন্ত্রাসীদের শিকারের কারণে অনেকটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে।
সোনারগাঁও ও মেঘনা উপজেলার
লোকজন এ চরের কাছে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে মেঘনা নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চর নুনেরটেকের মায়াদ্বীপ নামে পরিচিত গুচ্ছগ্রম-সবুজবাগ-রঘুনারচর সংলগ্ন এলাকায় ভাঙনের সৃষ্টি হয় অনেকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে।
ভবিষ্যতে যেনো কোনো বালু সন্ত্রাসী এ অঞ্চলে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করতে না পারে সেজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলামের বৃক্ষ রোপনের পরিকল্পনা। আর এ পরিকল্পনা তখনই বাস্তবায়ন হবে যদি বালু সন্ত্রাসীরা বালু কাটা বন্ধ করে।
তখন পরিশ্রমও সার্থক হবে এবং অবহেলিত মায়াদ্বীপ ধরে রাখতে পারবে তার সৌন্দর্য।
No comments:
Post a Comment