বন্দরে সংঘবদ্ধ চক্রের চার প্রতারক আবারও বেপরোয়া - সদ্য সংবাদ
আজ বঙ্গাব্দ,

শিরোনাম

Thursday, April 7, 2022

বন্দরে সংঘবদ্ধ চক্রের চার প্রতারক আবারও বেপরোয়া


সদ্য সংবাদ ডেস্কঃ 


নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মুছাপুর ও ধামগড় ইউনিয়ন সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া খবর প্রকাশের হুমকি দিয়ে এবং নানাভাবে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছে একটি সংবাদিক নামধারী ভুয়া চক্র। তারা মানুষকে ভড়কে দিতে ভাড়া করা গাড়িতে চড়ে ক্যামেরা নিয়ে দলবদ্ধভাবে হাজির হতো। টার্গেট ব্যক্তি ও আশপাশের কিছু ছবি তুলে বলা হতো 'আপনার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আছে।' 



এভাবে কিছুক্ষণ হম্বিতম্বি করার পর তারা যেত মূল প্রসঙ্গে। মোটা অঙ্কের টাকা দিলে খবর প্রকাশ-প্রচার করবে না বলে জানাত। ভুক্তভোগী অনেকেই বাধ্য হয়ে তাদের দাবি করা টাকা দিয়ে দিতেন।নিজেকে নামসর্বস্ব এসপি টিভির চেয়ারম্যান দাবি করা আক্তার হোসেন ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন গণমাধ্যমের পরিচয়পত্র বহনকারী কথিত সাংবাদিক নূর মোহাম্মদ সুজন, সোহাগ, আশিক নিজেদের মধ্যে সেই টাকা ভাগ করে নিত। দীর্ঘদিন ধরে এমন প্রতারণা করে আসছে এই সাংবাদিক নামের ভুয়া চক্রটি। তাদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। 

চলতি বছরের ৮ মার্চ রাতে  র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ অভিযানে

জেলার লাঙ্গলবন্দ চিড়াইপাড়া কলোনি থেকে ওই ভুয়া সাংবাদিক চক্রের সদস্য নূর মোহাম্মদ সুজন ও সোহাগ নামের দুই ভুয়া ডাক্তার সহোদরকে আটক করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বন্দর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন তখন।

আটককৃতরা উপজেলার লাঙ্গলবন্দ চিড়াইপাড়া কলোনির মনির হোসেনের ছেলে, এবং চিড়াইপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন মা মেডিক্যাল এন্ড ডক্টর চেম্বার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী।

অভিযান চলাকালে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে এলাকা থেকে সরে পড়ে একই সংঘবদ্ধ চক্রের অপর দুই সদস্য আক্তার ও তার ছোট ভাই আশিক ।

সে সময় র‌্যাব -১১ কর্তৃক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিএমডিসি কর্তৃক অনুমোদিত কিংবা একাডেমি সার্টিফিকেটধারী কোন রেজিষ্টার্ড ডাক্তার নয়, তারা ভূয়া ডাক্তার। তাদের কারো মেডিকেল এবং মেডিসিন বিষয়ক শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন সার্টিফিকেট নেই। পরবর্তীতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সাংবাদিকতার পরিচয় পাওয়া গেলেও তাদের সাংবাদিকতার নূন্যতম যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের নিকট উক্ত ভূয়া ডাক্তারের নিকট চিকিৎসা নিতে প্রচারণা ও উৎসাহ দিয়ে থাকে। এছাড়া তারা ড্রাগ লাইসেন্স ব্যতিত উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের ফার্মেসীতে বিভিন্ন প্রকার যৌন উত্তেজক ঔষধ এবং স্বল্পমূল্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি করে আসছিল।

র‌্যাব ১১ সিপিসি নারায়ণগঞ্জের কোম্পানির উপ পরিচালক স্কোয়াড্রন লীডার এ কে এম মনিরুল আলম প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, গ্রেফতারকৃত আসামিরা দুই ভাই। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাদের আপন অপর ছোট ভাই পলাতক আসামি ডাক্তার পরিচয় দেওয়া মোঃ সোহেল মাহমুদ খানের সহযোগী ও কম্পাউন্ডার হিসেবে পরিচয় দিয়ে তারা বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন এবং উক্ত ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমে বিভিন্ন প্রকার ভ্যাকসিন ইঞ্জেক্ট করে বলে জানায়।পলাতক আসামি বিএমডিসি কর্তৃক অনুমোদিত কিংবা একাডেমিক সার্টিফিকেটধারী কোন রেজিস্টার্ড ডাক্তার নয়। সে একজন ভুয়া ডাক্তার। 

র‌্যাব ১১ এর হাতে গ্রেফতারকৃত নূর মোহাম্মদ সুজন ও সোহাগ কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে এসে এসপি টিভির (ফেসবুক টিভি) চেয়ারম্যান দাবীকরা আক্তার হোসেন ও তার আপন ছোট ভাই আশিককে সাথে নিয়ে আবারও সংঘবদ্ধ হয়ে উঠেছে।

এই ভূয়া সাংবাদিকদের প্রতারণা ও চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট স্থানীয় শিল্প কলকারখানা, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।

তারই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার দুপুরে উপজেলার কামতাল এলাকায় অবস্থিত টোটাল ফ্যাশন গার্মেন্টের নিরাপত্তা বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের জন্য মাটি কাটছিলেন শ্রমিকরা। এসময় চিড়ইপাড়া কলোনীর সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য আক্তার হোসেন সহ ১০-১২ জন নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এবং শ্রমিকদের মারধর সহ অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করলে স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে এগিয়ে আসলে আক্তার হোসেন ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। এঘটনায় গার্মেন্ট ফ্যাক্টরীর মালিক পক্ষে এডমিন ফিরোজ খান বাদী হয়ে আক্তার হোসেন সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ তদন্তকারি কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহবুব আলম জানান,টোটাল ফ্যাশন গার্মেন্টে ফিরোজ খান বাদী হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগটি তদন্তাধীন। তদন্ত সাপেক্ষে আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


এসএস/বি



No comments:

Post a Comment