সোনারগাঁয়ে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উকি দিচ্ছে লিচুর সোনালী মুকুল। - সদ্য সংবাদ
আজ বঙ্গাব্দ,

শিরোনাম

Tuesday, March 15, 2022

সোনারগাঁয়ে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উকি দিচ্ছে লিচুর সোনালী মুকুল।

 


থোকায় থোকায় লিচুর মুকুল দুলছে ফালগুনের মাতাল হাওয়ায়। সবুজ পাতার ফাঁকে হলদেটে মুকুল গুচ্ছ যেনো হাসছে। সেই হাসিতে মাতাল হয়ে মৌমাছিগুলো উড়ছে তো উড়ছেই। বাগানের সুনসান নীরবতা চিরে একটানা গান শোনাচ্ছে ঝিঁ ঝিঁ পোকা। শিলা বৃষ্টি বা কালবৈশাখীর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের খঁরায় না পড়লে প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ে এবার লিচু উৎপাদনে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক ভালো হবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

ছোট ও মাঝারি আকারের গাছসহ সকল ধরনের গাছে মুকুল এসেছে। লাভবান হওয়ার আশায় বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। সোনারগাঁও পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায় প্রায় বাড়িতেই আম ও লিচু গাছে মুকুল দুলছে। এই অবস্থায় ভালো ফলনের আশায় সুন্দর স্বপ্ন দেখছেন এলাকার চাষিরা।

এ দিকে, মৌসুমী ফল ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় আগে থেকেই আম-লিচু গাছগুলো কিনে রাখছেন। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়লে এবার ভালো ফলন পাবেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

সোনারগাঁ পৌরসভার দিঘীর পাড় এলাকার লিচু চাষি পিয়ার হোসেন বলেন, বাগান কয়েক ধাপে বিক্রি হয়। গাছে মুকুল আসার আগেই এবং লিচু গুটি হওয়ার পরে বাগান বিক্রি হয়। লিচু পাকার আগেই বেশ কয়েকবার পরিবর্তন হয় বাগানের মালিকানা। তবে অনেক বাগান মালিকরা লাভের আশায় নিজেই শ্রম দেন। অনেক সময় খঁরার কারণে লিচুর আকার ছোট হয়ে যায়। আবার অনেক সময় বৈশাখী কালবৈশাখী ঝড়ে সব লণ্ডভণ্ড হয় লিচু বাগান। তখন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয় লিচু চাষি ও ব্যবসায়ীরা।  

সোনারগাঁ উপজেলার যেসব জায়গায় লিচু বাগান আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—পানাম, গোয়ালদী, বৈদ্যের বাজার, ভট্টপুর, গাবতলী, হারিয়া, অর্জুন্দী, গোবিন্দপুর, কৃষ্ণপুরা, বাগমুছা, হাতকোপা, দত্তপাড়া, খাসনগর, দীঘিরপাড়, চিলারবাগ, দৈলরবাগ, দরপত, টিপরদী, হরিষপুর, তাজপুর, সাদীপুর, ইছাপাড়া, দুলালপুর, বারদী, সেনপাড়া, বালুয়া ইত্যাদি। পাতি, কদমী আর বোম্বাই—এই তিন প্রজাতির লিচুর ফলনই সোনারগাঁয়ের বাগানগুলোতে বেশি হয়ে থাকে। তবে এর মধ্যে পাতি লিচুর চাষই সবচেয়ে বেশি হয়। তা ছাড়া এ প্রজাতির লিচু সবচেয়ে আগে বাজারে আসে।

সোনারগাঁ উপজেলার কৃষি অফিসার মনিরা আক্তার জানান, চলতি মৌসুমে এবার উপজেলায় বসতবাড়ি সহ বিভিন্ন স্থানে ১o০ হেক্টর জমিতে লিচুর গাছ রয়েছে। আমরা লিচু চাষি সহ বসত বাড়িতে থাকা লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গাছ মালিকদের সেবা দিয়ে আসছি। এখন লিচুর মুকুল এসেছে তাই গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া সহ বাগানে কীটপতঙ্গ, মাকড়সা দূর করার জন্য বালাইনাশক স্প্রে করা সহ গাছ ও মুকুলের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে গাছ মালিকদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী লোকজন নিয়ে লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মাঠে কাজ করছেন।


No comments:

Post a Comment