একজন মানবিক পুলিশ মোঃ পারভেজ মিয়া (বিপিএম) - সদ্য সংবাদ
আজ বঙ্গাব্দ,

শিরোনাম

Thursday, May 27, 2021

একজন মানবিক পুলিশ মোঃ পারভেজ মিয়া (বিপিএম)




একজন মানবিক পুলিশ কনেস্টেবল। অফিসের কাজ সেরে প্রতিদিনই নেমে পড়েন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আবার কখনো প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা সহায়তায়।কিছুদিন আগে বড়বোন এক অসহায় লোককে লাঠি নিয়ে হাটতে দেখে খুব কষ্ট পায়,এরপরই ভাইকে জানায়, সড়ক দুর্ঘটনায় তুর পা চলে গেলেও সরকার থেকে তুকে হাটার জন্য কৃত্রিম পা লাগিয়ে দিয়েছে। একটি অসহায় লোক যার দুটা পা থাকলে স্বাভাবিকভাবে হাটতে পারেনা তাই তুই তাকে হাটার জন্য দুটা স্টেচার কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করো।বোনের এমন আবদার তো কখনো ফেলে দেবেনা  ছোটভাই।তাই ঢাকা গিয়ে নিজেই কিনে আনেন দুটো স্টেচার।এবং সেই লোককে খুঁজে এনে উপহার দেন স্টেচার।

বলছি সেই সাহসী পুলিশ কনস্টেবল মোঃ পারভেজ মিয়া( বিপিএম) এর কথা । কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় পুষ্টিং, মেঘনা হাইওয়ে পুলিশ কমান্ড এন্ড মনিটরিং সেন্টারে সারাদিন সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি করছেন নানা মানবিক কাজ।

পারভেজ মিয়ার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার হোসেনদি গ্রামে।পারভেজ মিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে। তার বাবা দেশবাসীকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করতে অস্ত্র হাতে যে যুদ্ধ করেছেন, সেখান থেকেই মানবসেবার আদর্শ গ্রহণ করেছেন তিনি।নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার থেকে ৪২তম ব্যাচে প্রশিক্ষণ শেষে ২০১৬ সালে পুলিশে যোগ দেন।

২০১৭ সালের ৭ জুলাই শুক্রবার। সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। দুপুরের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছিলেন পারভেজ। খবর আসে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক থেকে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডোবায় পড়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান তিনি। আবর্জনায় ভর্তি ডোবা। বৃষ্টির পানি জমে আরও বেশি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। আশপাশে মানুষের ভিড়। কিন্তু কেউই উদ্ধার কাজে নামছেন না। অন্যদিকে, বাসের ভেতরে আটকা পড়া মানুষের তখন বাঁচার আকুতি।‘ঠিক তখন একাই ডোবায় নেমে পরেন। একটি ইট দিয়ে বাসের জানালার কাচ ভেঙে ভেতরে যায়। প্রথম উদ্ধার করে তিন মাসের এক শিশুকে। এরপর একাই ২৬ জনকে বাইরে নিয়ে আসে। ততক্ষণে অন্যরাও এগিয়ে এসেছে। সবার চেষ্টায় নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায় ৪০টি প্রাণ।

তার এমন সহযোগিতা পেয়ে খুশি খেটে খাওয়া এসব মানুষ।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদে পড়া বাসের যাত্রীদের জীবন বাঁচানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার হাতে তুলে দেন পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার বাংলাদেশ পুলিশ পদক বা বিপিএম।

২০১৯ এ মুন্সিগঞ্জের জামালদি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের একটি সিসি ক্যামেরা কাজ করছিল না। সেটি দেখতে গত সোমবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের নিজ কর্মস্থল থেকে বাসে করে ওই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যান তিনি। বাস থেকে নেমে রাস্তা পার হতে গেলেই দ্রুত গতিতে আসা একটি পিকআপ ভ্যান তাঁকে চাপা দেয়।চিকিৎসা শেষে চিকিৎসক জানান,পচন ধরায় অস্ত্রোপচার করে পারভেজের হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলতে হয়েছে।পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে , চিকিৎসকের পরামর্শে  কৃত্রিম পা লাগানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

পারভেজ বিপিএম বাংলাদেশ সোনারগাঁও সময়'কে জানান,‘আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার নীতি ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমার জীবন গড়ে তুলেছি।আমি সব সময় চেষ্টা করি অসহায় গরীব দুঃখি মানুষের পাশে দাড়াঁনোর জন্য,আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী সব সময় চেষ্টা করি তাদের জন্য কিছু করার।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন সব সময় দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করে যেতে পারি।

No comments:

Post a Comment