বন্দরে চেয়ারম্যান পুত্র শুভ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট লাঙ্গলবন্দ এলাকার জনগন। - সদ্য সংবাদ
আজ বঙ্গাব্দ,

শিরোনাম

Sunday, April 3, 2022

বন্দরে চেয়ারম্যান পুত্র শুভ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট লাঙ্গলবন্দ এলাকার জনগন।

 

সদ্য সংবাদ ডেস্কঃ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় একটি রাজনৈতিক পরিবারের প্রভাবে হত্যা, চাঁদাবাজি,জমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। এক আতঙ্কের জনপথে পরিনত হয়ে উঠেছে মুছাপুর ও ধামগড় ইউনিয়ন। আর এলাকার জনগণ বলছে এর নেপথ্যের একমাত্র কারিগর হলো মাকসুদ হোসেন চেয়ারম্যান। 



জেনে নেই কে এই মাকসুদ হোসেন চেয়ারম্যান। নারায়ণগঞ্জের বন্দরে রাজাকারের তালিকায় থাকা এম এ রফিকের ঘরে জন্ম নেয় মাকসুদ হোসেন।

মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে তার বাবা এম এ রফিক'র ভূমিকা ছিলো দেশের বিরুদ্ধে, মানবতার বিরুদ্ধে। শান্তি কমিটির সদস্য ছিলো সে। যুদ্ধকালীন সময়ে পরিবার নিয়ে সে কুটিপাড়ায় বসবাস করলেও  চুরি,ডাকাতি,হত্যা,নারী নির্যাতনের মতো জগন্য কাজে নিয়োজিত থাকায় স্থানীয়  জনতার রোসানলে পড়ে এলাকা ছেড়ে মুছাপাড়া ইউনিয়নের চিড়ইপাড়ায় পরিবার সহ চলে আসে। এখানেও তার অত্যাচারে অতিষ্ট ছিলো এলাকার লোকজন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে,পাকিস্তান আমল ও স্বাধীনতার পর,মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন থেকে শুরু করে রফিক,কসাই নবী হোসেন ও কাজী মহাসিন সহ একের পর এক অনেকগুলো হত্যাকান্ড ঘটায় এম এ রফিক ও তার ছেলেরা।

মুখ খুলে বলার সাহস না করলেও,তার চার ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মুয়াজ্জিন হোসেন কালুকে কে বা কাহারা হত্যা করে লাশ পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে রাখে।

২০০১ সালে বিএনপি সরকার যখন ক্ষমতায়,তখন চরম বেকায়দায় পড়ে মাকসুদ হোসেন ও তার পরিবার। প্রশাসনিক চাপে এলাকা ছেড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্রে গিয়ে ভাড়া থাকতেন মাকসুদ হোসেন সহ তখনকার শীর্ষ সন্ত্রাসী তার বড় ভাই আনোয়ার হোসেন,মোরশেদ হোসেন মুন্সী ও মোয়াজ্জিন হোসেন কালু সহ অন্যান্যরা। এরপর তারা সচারাচর এলাকায় না আসলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে এলাকায় আবার তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বেড়ে যায়।

ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবৈধ ভাবে অর্জিত আয়ে পূর্বের চেয়ে এখন একশত গুন বেশি অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন রাজাকার পূত্র মাকসুদ হোসেন চেয়ারম্যান। তার একক প্রভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠে তার ছেলে মাহমুদুর হাসান শুভ।

পারিবারিক সন্ত্রাসের ধারাবাহিকতা ও অবৈধ অর্থের দাপট আর রাজনৈতিক সেল্টারে মাকসুদের ছেলে মাহমুদুর রহমান শুভ গড়ে তুলেছে এক সন্ত্রাসী বাহিনী। 

বাপ চাচাদের মতো শুভ বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে লাঙ্গলবন্দ এলাকায় এখন এহেন কোন কাজ নেই যা ঘটছে না! চাঁদাবাজি,মাদক,খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি,লুটপাট সহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করাই এই বাহিনীর কাজ।    লাঙ্গলবন্দ এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রে পরিনত করেছে চেয়ারম্যান পুত্র শুভ বাহিনীর সদস্যরা। 

কিছুদিন আগে ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দাবীকৃত ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা না পেয়ে  ধামগড় ইউপির সদস্য ৪ নং ওয়ার্ড জনপ্রতিনিধি সফুরউদ্দিনকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান পুত্র শুভ'র বিরুদ্ধে সফুরউদ্দিন মেম্বার বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাকসুদ চেয়ারম্যান।

তারই ফলশ্রুতিতে পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সিদ্দিরগঞ্জের একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বন্দরের ধর্ষণ মামলার আসামির মৃত্যুর ঘটনায় নাটকীয় ভাবে হত্যা মামলায় সফুরউদ্দিনকে মিথ্যে আসামি করা হয়। 

কিন্তু সফুরউদ্দিন এর পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ,সেই হত্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এখন নানা কুটকৌশলে সফুরউদ্দিন মেম্বারকে চিরতরে শেষ করে দিতে মাকসুদ চেয়ারম্যান মরিয়া হয়ে উঠেছে।

অনুরূপ,মাকসুদ হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে ২০১১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে,সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছেড়ে ভালো হয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিতে জনগনের ভোটে মুছাপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় মাকসুদের বড় ভাই আনোয়ার হোসেন।

চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার ঘোষনা পেয়েই বেপরোয়া হয়ে উঠে আনোয়ার। নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহনের আগেই তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আরো বেড়ে যায় ।

ওই সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত নেতাকর্মীসহ নিরীহ সাধারণ মানুষের ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ করে নিজ দখলে নিয়ে নেয় আনোয়ার বাহিনী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সোনারগাঁ ও বন্দর উপজেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। 

এ সময় বিচার সালিশের নামে নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান আনোয়ার এক রায়ে সনাতনী  সম্প্রদায়ের এক যুবকের পূরুষাঙ্গে ইট বেঁধে ৩ কিলোমিটার হাঁটানোর ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপার সৃষ্টি হলে,হাইকোর্টের এক রিটপিটিশনে তখন তলব করে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্টদের। 

এ ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা করা হলে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মারা যায় ওই নবনির্বাচিত মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন। 

পরে মুছাপুর ইউপির উপ নির্বাচনে মাকসুদ হোসেন জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়। আর ক্ষমতাসীনদের আস্তাভাজন ব্যক্তি বনে যায় সে।

এভাবেই রাজনৈতিক প্রভাবে মুছাপুর ও ধামগড়ে একক আদিপত্য বিস্তার অপরাধের রাজত্ব কায়েম করে মাকসুদ চেয়ারম্যান।  

শুভ বাহিনীর নির্যাতনের শিকার ধামগড় ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য সফুরউদ্দিন জানান,…মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদের ছেলে শুভ  ও তার বাহিনী গত ১০ মার্চ দুপুরে স্থানীয় টোটাল ফ্যাশন গার্মেন্ট সংলগ্ন এইচ এস কে বিডি লেভেল ফ্যাক্টরী থেকে লক্ষাধীক টাকার ঝুট ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ ছিনতাইয়ের ঘটনাটি গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৪ মার্চ ১১ টার দিকে দাবীকৃত ৩০ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় আমার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে  ব্রহ্মপূত্র নদের তীরে অবস্থিত (পরিত্যক্ত) সোনালী পাম্প নিউজ প্রিন্ট মিলের আন্ডারগ্রাউন্ডে টর্চার সেলে নির্যাতনের পর হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায় শুভ ও তার বাহিনী। কৌশলে পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়ে চলে আসি। এ ঘটনায় শুভ’র বিরুদ্ধে মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান মাকসুদ পুলিশকে ম্যানেজ করে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত ব্যক্তি মারা গেলে নাটকীয় ভাবে হত্যা মামলায় আমাকে ৬ নং আসামি করে হয়রানীতে ব্যর্থ হয়। এবং আমাকে তুলে নেয়ার প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার ৬ জন স্বাক্ষীর বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করে মাকসুদ চেয়ারম্যানের বিমাতা বোন জামাই সোহেল মিয়া। এছাড়াও হত্যাসহ নানা হুমকি ধমকি অব্যহত রেখেছে রাজাকার পুত্র মাকসুদ ও তার ছেলে শুভ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। 


এসএস/বি


No comments:

Post a Comment